পরিযায়ি গান
আনন্দ রোজারিও
আলোর উৎসমুখ যে তুমি হে ধেণু
পিপাসার্ত আমি, পান করাও তোমার কাম্যজল
হরষিত হোক ধূম উদ্গীরণের অগ্নি-
পুনর্বার স্নাত হই
দস্যুচিহ্নিত কোন ভূমি নয়
আমরা যেচে নিয়েছিলাম রাত্রিপ্লাবী ঘৃণা আর
পিতার মুর্খমুখোশ
পাহাড় থেকে যারা ফিরেছিলো ধ্বস্ত ছিল তাদের হস্তযুগল
অক্ষিকোটর থেকে উৎপাটিত তাদের চোখ
ত্রস্তকান্ত আমরা সবাই ছিলাম আয়ূধবিহীন
আমাদের পদতল থেকে একটু একটু করে ভেসে গিয়েছিল
একটি বাশিঁ আর ভেষজের নম্র বিজ্ঞান
তপোবন লুণ্ঠিত বলে আমাদের মাতৃনাম সহসা নিখোঁজ
তোমরা বলেছ বলেই নদীবক্ষে উঠেছে ঘূর্ণি
সহসা ধূলার আড়াল থেকে তবুও সরিয়ে নিয়েছ বস্ত্রাবরণ
সেই প্রথম আমরা জ্ঞাত হই- যৌনতায় কোন গন্ধভেদ নেই
দণ্ডহীন তামসবিকার, হে ধেণু, তারপর
রক্তপাত চলেছে কপট কীড়ায়- নগরে- ধর্মক্ষেত্রে- ঘুমন্ত শিয়রে
তবুও আয়ূষ্মান- তোমরাই কবি, আমরাতো প্রদোষের প্রতিবিম্বগণ
হে ধেণু, পশুচিহ্নিত নখাগ্রে কোন দূরনীরিক্ষ জ্যোৎস্না নয়
তখন চমকিত হয় আত্মহত্যার মতোন যৌনগন্ধী মেঘ
আর আমরা দাড়িয়ে রয়েছি প্রান্তর ছেড়ে খাদের কিনারে
যুযুধান মৃত্যুরহিত
তবুও প্রাণবন্ত করছ হে ধেণু, অবীজি ব্রীহি আর সুপক্ক গোধূমচূর্ণ
খল খল করে বয়ে চলেছে সে কোন খরসান নদী
তীরে তার অরণ্যচারী মৃগদল আর হৃতবান ফলবীথি
নিজেরই ছায়ার ভিতরে শুনছি দ্রিমি দ্রিমি গান
ঝলসিত মাংসে মেশাচ্ছি বহুকাল ধরে
আমাদের আনন্দিত কুন্দকুসুম
হে ধেণু, সে আমার বেদনার বনচর বোন
যতবার দেখেছি তাকে, ততবার অপসৃয়মান পিতা
চতুর্দিক থেকে ভাসিয়ে দিচ্ছেন জায়মান চারটি প্রবল মুখ
আর হাহাকার
হে ধেণু, তৃষ্ণার্ত আমি, যাচমান অন্ধকারে
কুচভারে নত নই, আলোর উৎস ছেড়ে
যে তুমি আমার প্রতীম
আমাকেই উপ্ত করি আমার নিভৃতে